রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি তাযীম-সম্মান

মুফতী মাওলানা গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী

 

রাসূলুল্লাহ (সা.) সৃষ্টিকুলের মধ্যে সর্বোচ্চ সম্মানের অধিকারী মহান ব্যক্তিত্ব। সাহাবায়ে কিরাম তাঁর এ মর্যাদা সম্পর্কে অবগত ছিলেন। তারা তাঁর প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করতেন। এমনকি তা’যীম-সম্মানের কারণে তাঁর প্রতি পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকাতেন না।

বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আমর ইবনুল আস (রা.)-এর মৃত্যুর সময় নিকটবর্তী হলে। তিনি এসব আপন পুত্রকে নিজের তিনটি অবস্থা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, প্রথম অবস্থা ছিল এমন যে, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সবচেয়ে বড় শত্রু ছিলাম। যদি আমি সে অবস্থায় মারা যেতাম তবে দোযখী হতাম। দ্বিতীয় অবস্থা হলো, ইসলাম গ্রহণের পরবর্তী অবস্থা; এ সময় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চেয়ে প্রিয় কোনো ব্যক্তি আমার নিকট ছিল না এবং আমার দৃষ্টিতে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চেয়ে অধিক উঁচু মর্যাদাসম্পন্ন ও ভয় পাওয়ার মত ব্যক্তিত্বের অধিকারী আর কেউ ছিল না। আর তার ব্যক্তিত্বের কারণে কখনো তাঁর চোখের দিকে সরাসরি দৃষ্টি দিতে পারতাম না। এ কারণে যদি কেউ আমাকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর শারীরিক গঠন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, তবে আমি তা বর্ণনা করতে পারব না। আর যদি আমি এ অবস্থায় মারা যাই তবে আশা করি জান্নাতে গমন করব। তৃতীয় অবস্থা ছিল শাসনকার্য পরিচালনার; যে সময়ে আমি নিজের অবস্থা সম্পর্কে অবগত নই। (তিরমিযী)

 

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পদযুগল চুম্বনের ঘটনা

একবার দ্ইু ইয়াহুদী নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দরবারে হাযির হলো, এবং নয়টি স্পষ্ট নিদর্শন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা তাদের বলে দিলেন। তখন তারা নবী করীম (সা.)-এর হাতে ও পায়ে চুম্বন করল এবং বললো, আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি নবী। (তিরমিযী, বাবু মা জাআ ফি কুবলাতিল ইয়াদি ওয়ার রিজল)

সাফওয়ান বিন আস্সাল বর্ণনা করেন, ইয়াহুদীদের একদল নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাত ও উভয় পা মুবারকে চুম্বন করেছিল। (ইবনু মাজাহ)

 

হযরত আসলা বিন শরীক (রা.) অপবিত্র অবস্থায় রাসূল (সা.)-এর কাজাওয়ায় হাত লাগানোকে দোষণীয় মনে করতেন:

হযরত আসলা বিন শরীক সর্বদা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উটের পিঠের কাজাওয়া (উটের পিঠে বসার জন্য হাওদা) স্থাপন করে দিতেন। (তিনি বলেন) শীতের দিনে একরাতে আমার গোসল অত্যাবশ্যক হলো। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফর করার ইচ্ছে পোষণ করলেন। আমি নাপাকী অবস্থায় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাজাওয়া স্থাপন করা পছন্দ করলাম না। আর আমার ভয় ছিল ঠাণ্ডা পানির দ্বারা গোসল করলে মারা যাব অথবা অসুস্থ হয়ে পড়ব। এ কারণে আনসারীদের এক ব্যক্তির দ্বারা আমি কাজাওয়া স্থাপন করিয়ে দিলাম। এরপর পানি গরম করে আমি গোসল করলাম। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবীদের সাথে মিলিত হলেন এবং বললেন, হে আসলা বিন শরীক! আজ কাজাওয়া স্বীয় জায়গা থেকে কেন হেলে রয়েছে? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আজ তা আমি স্থাপন করিনি, এক আনসারী তা স্থাপন করেছে। তিনি আমাকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলেন। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার উপর গোসল অত্যাবশ্যক ছিল এবং ঠাণ্ডা পানির দ্বারা গোসল করলে আমার প্রাণের আশঙ্কা ছিল, আর এ কারণে আমি অন্যকে দিয়ে আজ কাজাওয়া স্থাপন করিয়েছি। এরপর পানি গরম করে গোসল করছি। এর ভিত্তিতেই তায়াম্মুমের আয়াত অবতীর্ণ হয়। (ইসাবাহ, তাফসীরে দুররে মানছুর, দারা কুতনী, তাবরানী ও বায়হাকী)

 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে আদব রক্ষা করে কথা বলার বর্ণনা

হযরত সাঈদ ইবনু ইয়ারবু কুরাশী মাখযুমীর নাম ছিল ছরম। একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন, আমাদের মধ্যে কে বড়, তুমি না আমি? তিনি উত্তর দিলেন, আপনি আমার চেয়ে উত্তম ও পুণ্যবান। কিন্তু বয়স আপনার চেয়ে আমার বেশি। তা শুনে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার নাম পরিবর্তন করে দিলেন এবং বললেন, তুমি সাঈদ (অর্থাৎ সৌভাগ্যবান)। (ইসাবাহ)

 

হযরত আবূ আইয়ূব আনসারীর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে আদব রক্ষা ও বরকত লাভ

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন হিজরত করে মদীনায় আগমন করলেন, তখন তিনি হযরত আবূ আইয়ূব আনসারীর গৃহে অবস্থান করেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার গৃহের নিচের অংশে অবস্থান করছিলেন। আবূ আইয়ূব আনসারী নিজের পরিবার নিয়ে উপরের অংশে অবস্থান করছিলেন। এক রাতে আবূ আইয়ূব আনসারী ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে বলতে লাগলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপরে চলাফেরা করছি; এই বলে তিনি নিজের জায়গা থেকে সরে এক পাশে রাত্রি অতিবাহিত করলেন। প্রভাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট এসে বিষয়টি পেশ করলেন; নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, নিচের অংশে অবস্থান করাই আমার জন্য আরামদায়ক। তিনি বললেন, আমি এমন ছাদে অবস্থান করব না যার নিচে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অবস্থান করছেন। এরপর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপরের অংশে চলে গেলেন এবং আবূ আইয়ূব আনসারী নিচের অংশে চলে আসলেন। তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে খাবার পাঠাতেন এবং খাবার অবশিষ্ট যা থাকত তার ব্যাপারে খাদিমকে জিজ্ঞেস করতেন; নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খাবারের সময় কোন জায়গায় আঙ্গুল রেখেছিলেন এবং সেখান থেকেই তিনি খাবার খেতেন। একদিন খাবার প্রস্তুত করা হলো, যাতে রসুন ছিল। আবূ আইয়ূব আনসারী পূর্বের অভ্যাস অনুযায়ী খাদিমকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোথায় আঙ্গুল রেখেছিলেন তা জিজ্ঞেস করলেন। খাদিম উত্তর দিল, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খাবার খাননি। তা শুনে আবূ আইয়ূব আনসারী ঘাবড়ে গেলেন এবং সাথে সাথে উপরে গিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! রসুন কি হারাম? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তর দিলেন, হারাম না তবে তা আমার পছন্দ নয়। তা শুনে হযরত আবূ আইয়ূব আনসারী বললেন, আমিও সে জিনিস পছন্দ করি না যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পছন্দ করেন না। (নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রসুন অপছন্দ করতেন এই জন্য যে), তার নিকট ফেরেশতা ওহী নিয়ে আগমন করতেন। (মুসলিম)

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জীবদ্দশায় যেমনিভাবে তাঁর সম্মান করা ওয়াজিব অনুরূপ তার ইন্তিকালের পরেও তাকে সম্মান দেখানো ওয়াজিব। সালাফ ও খালাফ সকল উলামায়ে কেরামের তরীকাও ছিল এটি। বিষয়টি বুঝার জন্য নিম্নে এ জাতীয় কয়েকটি উদাহরণ পেশ করা হলো।

হযরত ইসহাক নজিবী (র.) ইরশাদ করেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইন্তিকালের পর যখন তাঁর নাম উচ্চারিত হতো তখন সাহাবায়ে কিরাম বিনয় ও নম্রতা প্রকাশ করতেন। তাদের শরীরের পশম খাড়া হয়ে যেত। আর তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিচ্ছেদ ও ভালবাসার কারণে কান্নাকাটি করতেন। এ অবস্থা অনেক তাবিঈর মধ্যেই বিদ্যমান ছিল। (শিফা)

ইমাম মালিক (র.) বলেন, আমি আইয়ূব সাখতিয়ানী, মুহাম্মদ বিন মুনকাদির তাইমী, ইমাম জাফর সাদিক, আবদুর রহমান বিন কাসিম বিন মুহাম্মদ বিন আবু বকর সিদ্দিক, আমির বিন আবদুল্লাহ বিন যুবাইর, সাফওয়ান বিন সুলাইম এবং ইমাম মুহাম্মদ বিন মুসলিম যুহরীর সাথে সাক্ষাত করতাম। আমি তাদের এ অবস্থা প্রত্যক্ষ করেছি যে, যখনই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উল্লেখ হতো তখনই তাদের রং হলুদ হয়ে যেত। তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যিয়ারত করার জন্য কান্নাকাটি করতেন বরং তাদের কেউ কেউ অজ্ঞান হয়ে যেতেন। (শিফা)

ইমাম মালিক (র.) সারা জীবন মদীনায় অতিবাহিত করেছেন। আদব রক্ষার্থে কখনো মদীনা শরীফের সীমানার মধ্যে পেশাব পায়খানা করতেন না। (শিফা)

ইমাম শাফিঈ (র.) বলেন, ইমাম মালিক (র.)-এর দরজায় কয়েকটি খোরাসানী ঘোড়া ও মিসরী খচ্চর দেখতে পেলাম, যেগুলোর চেয়ে ভালো ঘোড়া ও খচ্চর আমি আর দেখিনি। আমি ইমাম মালিককে বললাম, এগুলো কতই না উৎকৃষ্ট! তিনি বললেন, এ সবগুলো আমার পক্ষ থেকে আপনাকে হাদিয়া হিসেবে পেশ করলাম। আমি বললাম, আপনার বাহনের জন্য এগুলির মধ্য থেকে কোনো একটিকে রেখে দিন। তিনি বললেন, আল্লাহর দরবারে আমার লজ্জা হয় যে, যে যমীনের মধ্যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিদ্যমান রয়েছেন, সে যমীনকে আমার ঘোড়ার খুরের দ্বারা পদদলিত করব। (ওয়াফাউল ওয়াফা, ২য় খণ্ড, ৪৫০ পৃষ্ঠা)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বৈশিষ্টাবলি আলোচনার দ্বারা এ কথা আরো স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, তাঁর সাথে অন্যান্য সৃষ্টিকে তুলনা দেওয়া কত জঘন্য অপরাধ। এ প্রসঙ্গে নিম্নে কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করা হলো।

হযরত মায়সারা আল ফজর থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ, কখন থেকে আপনি নবী? তিনি উত্তরে বললেন, যখন হযরত আদম আলাইহিস সালাম রূহ ও দেহে পৃথক অবস্থায় ছিলেন, অর্থাৎ যখন হযরত আদম আলাইহিস সালাম-কে সৃষ্টি করা হয়নি তখন থেকেই আমি নবী। (মুস্তাদরাকে হাকিম)

হযরত উবাই বিন কাব নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, কিয়ামতের দিবসে আমি নবীদের ইমাম হব, তাদের পক্ষ থেকে আল্লাহ তাআলার নিকট কথা বলব, তাদের জন্য আল্লাহ তাআলার নিকট থেকে শাফাআতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করব। আর এ জন্য আমার কোনো অহংকার নেই। (তিরমিযী)

হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, জিবরাইল আলাইহিস সালাম আমার নিকট আগমন করে বললেন, আমার এবং আপনার প্রতিপালক আপনাকে বলেছেন, কিভাবে আমি আপনার যিকিরকে সমুন্নত করেছি (তা কি আপনি জানেন)? তিনি বললেন, আল্লাহই সমধিক অবগত। তিনি বললেন, যখন আমাকে স্মরণ করা হবে তখন আমার সাথে আপনাকেও স্মরণ করা হবে। (সহীহ ইবনু হিব্বান)

হযরত আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আমাকে ছয়টি জিনিস প্রদান করার দ্বারা অন্যান্য নবীদের উপর মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে। ১. আমাকে জাওয়ামিউল কালিম (এমন বাক্য যাতে শব্দ কম কিন্তু এর অর্থ অনেক ব্যাপক) প্রদান করা হয়েছে, ২. আমাকে দেখলে শত্রুরা ভীত হয় এবং এর মাধ্যমে আমাকে সহযোগিতা করা হয়েছে, ৩. আমার জন্য গনীমত হালাল করা হয়েছে, ৪. ভূপৃষ্টের সকল অংশকেই আমার জন্য পবিত্র ও নামাযের স্থান হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে, ৫. আমাকে সকল সৃষ্টিজগতের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে এবং ৬. আমার দ্বারা নবুওয়াত সমাপ্ত করা হয়েছে। (মুসলিম)

হযরত আনাস বিন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, কিয়ামত দিবসে সর্বপ্রথম আমিই কবর থেকে বের হব। যখন সবাই আল্লাহ তাআলার দরবারে একত্রিত হবে তখন আমিই তাদের সরদার হব। যখন সবাই চুপ থাকবে তখন একমাত্র আমিই কথা বলব। যখন সবাইকে পাকড়াও করা হবে তখন আমিই তাদের জন্য সুপারিশ করব। যখন সবাই নিরাশ হয়ে যাবে তখন আমি তাদেরকে (মুক্তির) সুসংবাদ প্রদান করব। জান্নাত ও রহমতের চাবি সেই দিন আমার হাতেই থাকবে। আল্লাহ তাআলার প্রশংসার ঝাণ্ডা সেদিন আমার হাতে থাকবে। আমার প্রতিপালকের দরবারে সেদিন আমিই হব সকলের চেয়ে সম্মানিত আদম সন্তান। আমার চারপাশে সহস্র খাদিম পরিভ্রমণ করবে যারা অতিশুভ্র-সুরক্ষিত অথবা তারা বিক্ষিপ্ত মুক্তামালার ন্যায়। (তিরমিযী)

হযরত আবূ হুরায়রা (রা.) ইরশাদ করেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একাধারে রোযা পালন করতে নিষেধ করেছেন। তখন এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনিতো ধারাবাহিকভাবে রোযা পালন করেন, তিনি বললেন, তোমাদের মাঝে আমার মত কে আছে, আমার প্রতিপালক আমাকে খাওয়ান এবং পান করান। (বুখারী)

উপরোল্লিখিত হাদীসগুলোর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যত বৈশিষ্ট্য রয়েছে তা স্বীকার করা এবং বিশ্বাস করা ঈমানী দায়িত্ব।

 

[লেখক: বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, গবেষক, বহু গ্রন্থপ্রণেতা,

চেয়ারম্যান, দারুল ফিকর ওয়াল ইফতা আল ইসলামী]

শেয়ার করুন:
  • জনপ্রিয়
  • সাম্প্রতিক

নির্বাচিত

Don`t copy text!