সামাজিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় রাসূল (সা.) এর আদর্শ


-আবদুল আউয়াল ঠাকুর

আজকের সমাজের দিকে যদি তাকানো যায় তাহলে যে কেউ বলবেন অবস্থা ভাল নয়। কেন ভালো নেই সেকথা নিয়ে হয়তো মতৈক্য প্রতিষ্ঠায় সময় লাগবে তবে সমাজকে সঠিক পথে পরিচালনা যে জরুরী এ ব্যাপারে কোন মহলের বিন্দুমাত্র দ্বিমত নেই। সে বিবেচনায় এ ভাবনাও জরুরী যে সমাজ বলতে আমরা আসলে কী বুঝি এবং সমাজে আসলে কী ভেঙ্গেছে। সাধারণত একটি কাঁচপাত্র ভাঙ্গলে আমরা যে শব্দ শুনতে পাই তা অন্যকেও জানান দেয় যে একটা কিছু ভেঙ্গেছে। মানুষ সমাজবদ্ধ জীব। সমাজের ভালোমন্দ সব কিছুই তাকে প্রভাবিত করে, আন্দোলিত করে, বোধ-বিশ্বাসে নাড়া দেয়। উদাহরণ হিসেবে কাকের কথাই ধরা যাক। এটি একটি অবহেলার প্রাণী। কাককে কোন উদাহরণে নেয়া বোধ করি অনেকেরই পছন্দ না হবার কথা। অথচ কাকের এটি বড় গুণ। একটি কাক কোথাও আহত হলে কিংবা আক্রান্ত হলে কোত্থেকে দল বেঁধে কাকেরা এসে হাযির হয় সমবেদনা জানাতে। সাধারণভাবে কাক কোন হিংস্র প্রাণী নয় তা সত্ত্বেও কাকদের সংঘবদ্ধতা দেখলে অনেক সময়ই ভীতিকর বাস্তবতা মনে হয়। আক্রান্ত কাককে রক্ষার একটি গল্প বোধ করি এখানে প্রাসঙ্গিক হতে পারে। একবার এক যুবক শীতের সকালে খেজুর গাছে রস খেতে থাকা অবস্থায় একটি কাক ধরে ফেলল। যুবকটির মাথায় হয়ত কাক ধরার এ্যাডভেঞ্চারের কথাই ছিল। কারণ এ কাজকে সাধারণভাবে অসম্ভব মনে করা হয়ে থাকে। পিছন থেকে কাক ধরার পর দেখা গেল দলে দলে কাক যুবকটির মাথায় ঠোকর দিতে শুরু করল। এরপরের চিত্র বোধ করি বর্ণনার প্রয়োজন নেই। আরেকটি নিকৃষ্ট প্রাণী কুকুর। যে কেউ এটা দেখতে পারেন নির্দিষ্ট সময় ছাড়া তাদের মিলন হয় না। মেলার চেষ্টাও করে না। প্রাণী জগৎ থেকে আরেকটি পরীক্ষিত উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। পৃথিবীর প্রায় সব যাদুঘরে সিংহ এবং বাঘের মিলনে যে প্রাণীটির জন্ম হয়েছে তার নাম দেয়া হয়েছে লাইগার। এটির একাংশ দেখতে সিংহের মত অন্য অংশ দেখতে বাঘের মত। হয়ত বিজ্ঞানীদের মধ্যে এমন ধারণা কাজ করে থাকতে পারে যে এই দুটি প্রাণীর মিলন থেকে নতুন কোন জাতের জন্ম হলে সেটি হয়ত আরো মারাত্মক হয়ে উঠবে। প্রতিটি পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে লাইগারের সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষমতা নেই। রাশিয়ার বিখ্যাত দার্শনিক বার্নাড শ’র কাছে সে সময়ের খ্যাতিমান এক নায়িকা এসে প্রস্তাব করেছিলেন আসুন আমরা বিয়ে করি। কারণ আপনার প্রতিভা আর আমার সৌন্দর্য নিয়ে যে সন্তানের জন্ম হবে সে হবে আগামীর শ্রেষ্ঠ সন্তান। কিছুক্ষণ চুপ থেকে তিনি জবাব দিয়েছিলেন যদি এর বিপরীত হয় তা হলে? প্রকৃতির নিজস্ব কিছু নিয়ম রয়েছে। বিশ্বাসী হিসেবে প্রত্যেকেই এটা স্বীকার করেন ¯্রষ্টার হুকুমের বাইরে যাবার কোন ক্ষমতা বা এখতিয়ার কারো নেই। অথচ যে মানুষের অধীন করে অন্য সবকিছু সৃষ্টি করা হয়েছে সেই মানুষই এসবের কোন তোয়াক্কা করছে না। উপরন্তু নিয়মভাঙ্গার এক দুর্বিনীত প্রবণতায় সে নিজেকে নিয়োজিত রাখছে। বোধ করি আজকের সমাজ বিশ্লেষণে এর একটা আলোচনা জরুরী হয়ে উঠেছে।
চারিদিকে আজ মূল্যবোধের অবক্ষয়। ব্যাপারটি যে কেবল বাংলাদেশেই তা কিন্তু নয়। প্রকৃতিতে প্রভেদ থাকলেও দুনিয়া জুড়েই আজ এ প্রসঙ্গ উঠেছে। একেক অঞ্চলে এর প্রকৃতি আলাদা। রোমান ক্যাথলিকদের ধর্মযাজক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন গর্ভপাতের প্রসঙ্গ নিয়ে। ইসলামে গর্ভপাত নিষিদ্ধ। বাংলাদেশের সমাজ বিশ্লেষণে এখন দেখা যাচ্ছে হত্যা, ব্যাভিচার, নির্যাতন, অশ্লীলতা যেন সর্বগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে। অর্থনৈতিক বৈষম্য সমাজে শেকড় গেড়ে বসেছে। মিথ্যাচার নিত্যদিনের সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। শিক্ষার নামে অশিক্ষা-কুশিক্ষা গ্রহণ করছে আমাদের তরুণ-যুবকরা। বলা হচ্ছে বানের পানির মতো দেশে মাদক প্রবেশ করছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে কোনটি রেখে কোনটির প্রতিবিধানে সংশ্লিষ্টরা অগ্রাধিকার দেবেন সেটাই এখন মূল ভাবনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, যে সন্তানের জন্য মায়ের কোন বিকল্প নেই সে মা-ই এখন পরিণত হয়েছে হন্তাকারকে। যে পিতা পরম শ্রদ্ধেয়, তিনিই এখন পরিণত হয়েছেন হত্যাকারীতে। যে সন্তানের কাছে পিতামাতাই হচ্ছে সর্বাধিক শ্রদ্ধেয় সেই পিতা-মাতাকেই হত্যা করছে সন্তান। এসবের কোন কোনটি এমন সব তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ঘটছে যা প্রকৃতই আলোচনার মধ্যে পড়ে না। সামান্য মটরসাইকেলের জন্য পিতাকে হত্যা এটা কি কখনো ভাবা যায়? পরকীয়া বা এ ধরনের অনৈতিক অসামাজিক কারণের সূত্র ধরে সন্তান হত্যার মতো ঘটনা ঘটছে একের পর এক। দিন দিনই যেন এসব ঘটনা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। সমাজকে নিয়ে যারা একটু-আধটু ভাবেন তারা বলছেন সমাজে মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় ঘটেছে। সংগত প্রশ্ন হচ্ছে এটা কেন হয়েছে তা কি আমরা কেউ ভেবে দেখছি অথবা দেখার চেষ্টা করছি? প্রতিটি ঘটনার পরই সংশ্লিষ্টরা বলছেন অপরাধী যেই হোক ছাড় পাবে না। এভাবে কি অপরাধ কমেছে না বাড়ছে? প্রচলিত আইন-কানুনে অপরাধীদের শাস্তি দেয়ার প্রেক্ষিতে দেশে অপরাধীর সংখ্যা কমেছে সে কথা বোধ হয় কোন বিবেচনাতেই বলা যাবে না। তাহলে সাজার ভয় যদি অপরাধ কমাতে না পারে তাহলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণের বা সমাজকে অপরাধমুক্ত করতে বা অপরাধকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে বিকল্প কোন পথ রয়েছে সেটা যদি না ভাবা যায় তাহলে সমাজ রাষ্ট্রে অপরাধ বাড়তেই থাকবে। যার অর্থ দাঁড়াবে আমরা কেউ কোথাও নিরাপদ নই। এই যে সামগ্রিক নিরাপত্তাহীনতা তার উৎস খোঁজা জরুরী হয়ে দেখা দিয়েছে। সেখানেই মূল প্রশ্ন দেখা দিবে সমাজবদ্ধজীব হিসেবে আমরা কি কার্যত সামাজিক দায়িত্বপালন করছি নাকি প্রকৃত বিবেচনায় দায়িত্ব কী সেটাই ভুলে গেছি? পবিত্র কুরআনে অন্যায় প্রতিরোধের জন্য মুমিনদের একটি দল রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্যায়ের প্রতিরোধ সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন, প্রথমত শক্তি প্রয়োগ, না পারলে কথা দিয়ে আর তাও যদি সম্ভব না হয় তাহলে মনে মনে ঘৃণা করতে হবে। অবশ্যই শেষোক্তটি হচ্ছে দুর্বল ঈমানের লক্ষণ। এখন সমাজে যা ঘটছে তার সাথে মিলিয়ে দেখলে কি দেখা যাবে? অপরাধ অন্যায় যা কিছুই বলা যাক না কেন চোখের সামনেই এসব হচ্ছে অথচ সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে আমরা এর প্রতিবাদ করতে ভুলে গেছি অথবা প্রতিবাদের ঝুঁকি নিতে চাচ্ছি না। যার অর্থ হচ্ছে প্রতিবাদ না করে আমরা অপরাধকে প্রশ্রয় দিচ্ছি। আর সেকারণেই সমাজে অপরাধ প্রবণতা কমার পরিবর্তে বেড়েই চলছে। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে এ সমাজ তো এরকম ছিল না। তাহলে কেন এমন হল? এর উত্তরও খুঁজতে হবে আল্লাহর রাসূলের কাছেই।
বিদায় হজ্জে তিনি বলেছেন যতদিন তোমরা আল্লাহর কুরআন ও রাসূলের সুন্নাহ আঁকড়ে থাকবে ততদিন তোমাদের পতন হবে না। এখন দেখার বিষয় আমরা কি তা অনুসরণ করছি নাকি ধরে রেখেছি। ধরে রাখা এবং আঁকড়ে থাকায় যে পার্থক্য বোধকরি সমাজ বাস্তবতায় ততখানিই দুরবস্থা বিদ্যমান। সেকারণেই সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে মানুষের স্বীকৃতি থাকলেও মানুষদের অনেকেই নিজেদের সমাজচ্যূত করে অনেকটা আত্মকেন্দ্রিক বানিয়েছে। এক ধরনের বিমুখতা তাকে পেয়ে বসেছে। সেকারণেই মানুষের সমাজে এখন মোহ এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সে সবকিছুই বিবেচনা করছে তার স্বার্থে। সকল উপাদান তৈরি করছে আত্মতৃপ্তির জন্য। আইয়্যামে জাহেলিয়ায় সমাজে সবচেয়ে উপেক্ষিত ছিলেন নারীরা। আল্লাহর রাসূল (সা.) ইসলাম প্রবর্তনের মাধ্যমে সমাজে নারীদের সম্মান প্রতিষ্ঠিত ও তাদের সুউচ্চ মর্যাদায় আসীন করেছেন। একজন নারী যিনি মা, কন্যা এবং সহধর্মীনী প্রত্যেকের সুনির্দিষ্ট অবস্থান থেকেই তাদের সামাজিক অবস্থান ও গুরুত্ব নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকৃত সম্মান ও গুরুত্বের বিবেচনায় ইসলামে নারীদের যে অবস্থান নির্ধারণ করা হয়েছে তার নযীর বা এর কাছাকাছি কোন উদাহরণ পাওয়াও ভার। যার প্রথম সন্তান কন্যা তার জন্য সুসংবাদ, যিনি কন্যাদের সুপাত্রে দিতে পারবেন তার জন্য সুসংবাদ রয়েছে। সন্তানের জান্নাত মায়ের পায়ের তলে নিশ্চিত করা হয়েছে। এহেন বাস্তবতায় অনেকে বলে বেড়াচ্ছেন ইসলাম নারীর অধিকার খর্ব করেছে। মৌলিক বিবেচনার বিষয় হচ্ছে ইসলামে যদি নারীর অধিকার ক্ষুণœ করা হয়ে থাকে তাহলে কে কোথায় তা নির্ধারণ করেছে তার একটা প্রমাণযোগ্য বিবরণ অপরিহার্য। সম্পত্তিতে সমঅধিকারে যে প্রসঙ্গ তোলা হয় তার বিবেচনার মূল ভিত্তি হচ্ছে বিবাহহীন সমাজ। অথচ বিশ্বে সবচেয়ে ঘৃণ্য পেশা পর্ণোগ্রাফিতে নারীর ব্যবহার নিয়ে তারা কোন কথা বলেন না। বোধ করি এই যে পার্থক্য এটাই মূলত দৃষ্টিভঙ্গিগত। আর সেকারণেই সমাজে নারীর অবস্থান কি তা নিয়ে নানামাত্রিক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিতে নারী হচ্ছে পরিবারের খুঁটি। সংগতভাবেই খুঁটি যদি এলোমেলো হয়ে যায় তাহলে সে পরিবার শান্তির বা সুখময় হবার কোন উপায় নেই। আজ বিশ্বজুড়ে যে অশান্তির বাতাস বইছে তার পিছনে একটি বড় কারণ হচ্ছে নারীদের প্রতি গর্হিত আচরণ। অন্য বিবেচনাতে বলা যায় বৈষম্য। তথাকথিত মানবাধিকারের নামে বিশ্বজুড়ে মানুষে মানুষে যে বৈষম্য চলছে সেটাই বর্তমান সভ্যতাকে কুরে কুরে খাচ্ছে। এই বৈষম্য মূলত মানুষের স্বীকৃতি নিয়ে। সাদা-কালো, ধনী-গরীব, অভিবাসী, বর্ণবাদ, ব্রাহ্মণ্যবাদ সব মিলে সৃষ্টির সেরা মানুষ আজ মানুষের সৃষ্ট দুর্যোগে বিপর্যস্ত। আল্লাহর রাসূল (সা.) বিদায় হজ্জে ঘোষণা করেছেন মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই। জাহিলিয়ার যুগে সাধারণ মানুষ ইসলাম গ্রহণ করেছে বলে অনেক তথাকথিত ধনী সম্ভ্রান্তরা বলে বেড়াতো ইসলাম যদি সঠিকই হতো তাহলে আমরা তা গ্রহণ করতাম। কার্যত এই মহলের নানা ষড়যন্ত্রের মুখে পড়েই ইসলামকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। আল্লাহর রাসূল (সা.) জন্মভূমি মক্কা ছেড়ে মদীনায় গিয়ে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। সেখানে সামাজিক শৃঙ্খলার যে নযীর তিনি স্থাপন করেছেন আজো তার কোন তুলনা হয় না। তিনি যে সামাজিক শৃঙ্খলা স্থাপন করছিলেন তার ভিত্তি ছিল মানুষের প্রকৃত মর্যাদা। তিনি মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে দেখেছেন। আল্লাহ রাসূল (সা.) এরপর বিশ্বে কয়েক শতাব্দি পর্যন্ত মুসলমানরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলেন। মুসলমানদের শাসন আজকের যেকোন শাসনের তুলনায় শ্রেষ্ঠ ছিল। আজো যদি মুসলমানদের শাসনামলের নিরপেক্ষ পর্যালোচনা করা যায় তাহলে দেখা যাবে কোথাও মানুষের মর্যাদায় বিন্দুমাত্র আঘাত হানা হয়নি। কার্যত বর্তমান বিশ্বে যে সামাজিক নৈরাজ্য চলছে তার মূলে রয়েছে মানুষের প্রতি অসম্মান।
সংগতই প্রশ্ন উঠতে পারে কেন এই বাস্তবতা। সাধারণ ভাষায়, বক্তৃতা-বিবৃতিতে বলা হয় মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ নেই। বাস্তবে কি এটা সকলে মানছেন। দুনিয়াজোড়া যে অসামান্য বৈষম্য, হানাহানি তার মূলে রয়েছে মানুষের স্বীকৃতির প্রশ্ন। লিখিতভাবে যাই থাক না কেন বাস্তবে সকলে একথা মেনে নেন না বা নিচ্ছেন না যে সকল মানুষই এক ও অভিন্ন সত্তা। এর কারণ মানুষের তৈরি ভেদনীতি। মানুষের বিচারের মাপকাঠি হয়ে দাড়িয়েছে অর্থবিত্ত, ক্ষমতা, প্রভাব এইসব। মানুষকে যে মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে আল্লাহ তাআলা সৃষ্টি করেছেন বর্তমান বিশ্বে কার্যত তার বিপরীত ধারাই সক্রিয়। এই স্রোতে ভেসে বেড়াচ্ছেন প্রায় সবাই। অহংবোধ, বর্ণবাদ মানুষের চোখকে অন্ধ করে দিয়েছে। এই অন্ধত্ব এতই প্রবল যে, দিনের আলোর মতো যা সত্যি তাও তারা দেখেন না। ফলে এটাই বাস্তব হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যে জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল কার্যত তা ব্যর্থ হতে চলছে। এর কারণ শান্তি প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে বিশ্বে বিশেষ বিশেষ দেশের স্বার্থরক্ষার মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে জাতিসংঘকে। বিশ্ব সভ্যতা আজ যাদের জন্য হুমকির মুখে পড়েছে তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে কোন উদ্যোগ জাতিসংঘের নেই। বরং বিশ্বে ঘটছে তার উল্টোটি। বিশ্ব মানবতার মুক্তির সনদ আল্লাহর রাসূল (সা.) ঘোষণা করেছেন পবিত্র বিদায় হজ্জে। সেখানেই তিনি মানুষে মানুষে ব্যবধান ঘুচিয়ে দিয়েছেন। রং, বর্ণ এসব মানুষকে বিচারের কোন ভিত্তি হতে পারে না। আজও তাই একটি সুশৃঙ্খল সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই আল্লাহর রাসূল (সা.) এর প্রদর্শিত পথেই হাঁটতে হবে। যতক্ষণ না এটা করা যাবে ততক্ষণ বিশ্বকে শান্তিময় করার কোন পথ নেই।

[ লেখক : সাংবাদিক ও কলামিষ্ট; সহকারী সম্পাদক, দৈনিক ইনকিলাব
সুবহে সাদিক ২০১৬ থেকে সংগৃহীত]

শেয়ার করুন:
  • জনপ্রিয়
  • সাম্প্রতিক

নির্বাচিত

Don`t copy text!